হযরত আব্দুর রহমান বিন যায়েদ বিন
আসলাম (রাহঃ) বর্ণনা করেন, আশজাঅ্ গোত্রের দু’জন লোক একবার তাদের এক আত্নীয়ের বিয়েতে শরীক হবার জন্যে
যাচ্ছিল্। পথের
মাঝখানে এক জায়গার তাদের সামনে একজন মহিলা আসে। এবং বলে, তোমরা কোথায় যাও? ওরা বলে, আমরা এক আত্নীয়ের বিয়েতে উপঢৌকন
দিতে যাচ্ছি। মেয়েটি বলে, সে কথা আমার ভালো রকম জানা আছে। ফেরার পথে
তোমরা আমার সহিত সাক্ষাত করে যাবে। সুতরাং ফেরার পথে উভয়ে মেয়েটির
কাছে গেল। সে বলল, আমি তোমদের পিছনে পিছনে যাব। তখন তারা দু’টি উটের মধ্যে একটির উপরে দুজন সওয়ার হল এবং অন্য উটটিকে
পিছনে পিছনে চালাতে লাগলো। এভাবে যেতে যেতে একসময় তারা এক বালির টিলায় এসে পৌঁছল। সেই সময়
মেয়েটি বলল, এখানে আমার একটু দরকার আছে। তো তারা তার
জন্যে উট বসিয়ে দিল। মেয়েটি
উট থেকে নেমে টিলার আড়ালে চলে গেল।
উট থেকে নেমে টিলার আড়ালে চলে গেল।
ওরা উভয়ে অপেক্ষা করতে লাগলো। মেয়েটির
ফিরতে দেরি হচ্ছে দেখে দু’জনের মধ্যে একজন তার পায়ের দাগ ধরে ধরে খুঁজতে বের হল। কিন্তু তারও
ফিরতে দেরি হতে লাগলো। তখন বাকি লোকটি তার সঙ্গীকে খুঁজতে বের হল। এক জায়গায়
গিয়ে সে দুর হতে দেখতে পেল, সেই মেয়েটি তার সঙ্গীর পেটের উপর চড়ে বসে তার কলিজা বের করে
চিবিয়ে খাচ্ছে। তা দেখে লোকটি ফিরে এল। এবং তার
উটের পিঠের উপর সওয়ার হয়ে নিজের রাস্তা ধরলো। এমন সময়
মেয়েটি তার সামনে এসে বলতে লাগলো, তুমি এত তাড়াহুড়ো করছো কেন?
লোকটি বললো,
তুমি কেন এত দেরি করলে?
মেয়েটি তখন লোকটিকে ধরলো। লোকটি চিৎকার করে উঠল। মেয়েটি বললো,
তুমি চিৎকার করছো কেন?
লোকটি বললো,
আমার সামনে নিষ্ঠুর এক অত্যাচারী
বাদশাহ্ আছে। মেয়েটি বললো, আমি তোমাকে একটি দু’আ বলে দিচ্ছি। তুমি যদি সেই দু’আ সহকারে প্রার্থনা করো,
তবে তা সেই জালিম কে ধংস করে দিবে
এবং তার থেকে তোমার হক আদায় করিয়ে দিবে। লোকটি বললো, সেই দু’আটি কি? মেয়েটি বললো, সেই দু’আটি হল এইঃ-
“হে আল্লাহ! আপনি
তো আসমান ও তার নিম্নস্হ যাবতীয় বস্তুর প্রভু। এবং পৃথিবী
ও তার উপরিস্হ সকল কিছুরই পালনকর্তা। আর বায়ুমন্ডল ও তাতে ভাসমান বস্তুসমূহের প্রতিপালক। এবং শয়তানদল
ও তাদের দ্বারা পথভ্রস্টদেরও পালনকর্তা। আপনি পরম উপকারী, আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর স্রষ্টা তথা অতুলনীয় প্রতাপ ও
মাহাত্ন্যের অধিকারী। আপনি তো অত্যাচারীর কাছ থেকে অত্যাচারিতের অধিকার আদায়
করিয়ে দেন। সুতরাং অমুকের থেকে আমার হক আদায় করিয়ে দিন। কেননা,
সে আমার উপর জুলুম করেছে।”
লোকটি বললো,
ওই দু’আটি তুমি পুনরায় একবার আমাকে শোনাও। মেয়েটি
পুনরায় একবার দু’আটি বললো। ফলে লোকটি তা মুখস্হ করে নিল। তারপর সে ওই
মেয়েটির বিরুদ্ধেই দু’আটি করলো। এবং এভাবে বললোঃ-
“হে আল্লাহ! এই
মেয়েটি আমার উপর জুলুম করেছে এবং আমার ভাইকে খেয়ে ফেলেছে।”
সঙ্গে সঙ্গে আকাশ থেকে একটি আগুনের গোলা নেমে এল এবং
সেটা মেয়েটির লজ্জাস্হানের উপর পড়লো। ফলে মেয়েটির দেহ দু’টুকরো হয়ে গেল। এবং দু’টো টুকরো দু’দিকে গিয়ে পতিত হল। মেয়েটি ছিল
মানুষ খেকো মেয়ে জ্বিন।
{মাকায়িদুশ্
শাইত্বান, ইবনু আবিদ দুনইয়া (১৫৪),
পৃস্টা ১১২}
0 comments:
Post a Comment